বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

নেই সেই হালখাতার দিন!

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। উৎসবের উচ্ছ্বাসে বাঙালি মেতে ওঠে এ দিন। প্রাণের সুরে প্রাণ মিলিয়ে আনন্দে হয় মাতোয়ারা। পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সাথে একসময় ‘হালখাতা’র ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র থাকলেও বর্তমানে সেই দিন আর নেই। হালখাতা এখন শুধু স্মৃতির ডানায় ভেসে চলা কোনোও এক অতীতের পাখি।

বাংলা বর্ষের প্রথম মাস বৈশাখ। একসময় বৈশাখ দুয়ারে কড়া নাড়তে শুরু করলেই ছোট-বড় সকল ব্যবসায়ীরা হালখাতা নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে দিতেন। ঘটা করে আয়োজন করা হতো হালখাতা অনুষ্ঠানের।

ক্রেতাদের বিশেষ চিঠি পাঠিয়ে হালখাতায় যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ পাঠাতেন ব্যবসায়ীরা। শুধু দেনাদার ক্রেতাই নয়, আমন্ত্রণ যেতো সকল ক্রেতার কাছেই।

পহেলা বৈশাখের দিন আয়োজিত সেই হালখাতার অনুষ্ঠানে আগত ক্রেতাদের জন্য মিষ্টি-জিলাপীসহ মুখরোচক খাবারের ব্যবস্থা করতেন ব্যবসায়ীরা। দেনাদার ক্রেতারা এ দিন নিজেদের দেনা কিছুটা হলেও পরিশোধ করতেন। দিনশেষে দেনার টাকা পেয়ে হাসি ফুটতো ব্যবসায়ীর মুখে।

তবে বদলে গেছে সব। বর্তমান আধুনিকতার এই যুগে হালখাতা শুধুই স্মৃতি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে হালখাতার আয়োজন হয় না বললেই চলে। মূলত ক্রেতাদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায়ের জন্যই এই হালখাতার আয়োজন হতো। কিন্তু এখনকার সময়ে ক্রেতারাও বাকির খাতার পৃষ্ঠা যাতে না বাড়ে, সে বিষয়ে সজাগ থাকেন। ফলে বকেয়া আদায়ে ব্যবসায়ীদের আর হালখাতার দিকে চোখ দিতে হয় না।

সিলেট নগরীর মিষ্টিজাতীয় খাবারের পুরনো প্রতিষ্ঠান ‘আদি মোহনলাল’র পরিচালক মিহির ঘোষ এবং ঘোষ ডাইরি’র মালিক রতন ঘোষ বলেন, ‘বাঙালির প্রাণের উৎসব হালখাতা এখন ঠাঁই পেয়েছে স্মৃতির জাদুঘরে। আধুনিকতার রাক্ষুসে খিদে গিলে ফেলেছে বর্ণোচ্ছ্বল হালখাতাকে। আগে পহেলা বৈশাখে হালখাতা আয়োজন করতে ব্যবসায়ীরা মিষ্টির জন্য আগেভাগেই চাহিদার কথা জানাতেন। কিন্তু বর্তমানে হালখাতার জন্য কোনো ব্যবসায়ীই মিষ্টি নিতে আসেন না।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com